সহজভাবে বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যাঃ

লিখেছেন লিখেছেন রাফসান ৩১ জুলাই, ২০১৩, ০৩:৫১:৫৫ দুপুর

এরচাইতে বেশী রক্ত ঝরেছে তুরস্কে, এরচাইতে বেশী লেগিটিমেট সরকার বিলীন হয়েছে তুরস্কে, তারপরো এরদোগানরা টিকে আছে, এগিয়ে যাচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের সমস্যা হল, আমরা বেশী তাড়াহুড়ো করি। অল্পতেই ঠিক বেঠিকের গননায় চলে যাই। নিছক বাড়াবাড়ি ছাড়া এগুলো কিছুই না।

মিশরে যা হচ্ছে, তা অনাকাংখিত কিছু না। তুরস্কেও তা হয়েছে, এর চাইতে কম হয়নি, এরপর বিজয় এসেছে। একদিন বাংলাদেশে ইনশা আল্লাহ এই অবস্থা হবে। তখন যারা গনতন্ত্র-খেলাফত, পশ্চিমাবিশ্ব ইত্যাদি নিয়ে ফতোয়াবাজী করার তাঁরা করবে, যারা রক্ত দিয়ে শাহাদাতের প্রমান দেয়ার তারা দিবে। এখানে নতুন কিছু নেই। সব আইটেম সব যুগেই ছিল, আছে, এবং থাকবে।

সফলকামতো তারাই ইনশা আল্লাহ, যারা কিছু রক্ত দেখেই ফতোয়াবাজীতে নেমে পড়েনি, বরং শহীদদের রক্তের শপথ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেখিয়েছে। যাদের সে সাহস নেই, তারা ঘরে বসে আঙ্গুল চুষুন, বা গনতন্ত্র-খিলাফতের তর্ক করুন, বা নামাজ-রোজা করুন। কারন ইসলাম প্রতিষ্টার কাজ বুঝার মত জ্ঞানও আপনার হয়নি, এই ব্যাপারে হেদায়াততো দুরের কথা। আপনি সব মিলিয়ে বুঝবেন খতনা করা, জানাযা পড়া পর্যন্ত। এর বেশী বুঝ আপনাদের থাকলে ইসলাম বহু আগেই সারা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারত। রক্ত ঝরতনা মানুষের, অভাবের তাড়নায় শরীর বিক্রি করতো না কেউ, সুদ-ঘুষ-খুন-দুর্নীতিতে জর্জরিত হত না মানবতা। কিন্তু আপনার তা বুঝার দরকার নেই, আপনার কেবল নামাযে হাত বুকে বাধবেন না পেটে, বিবি তালাকের আরো আরো নিয়ম ইত্যাদি নিয়েই ব্যস্ত থাকলে চলবে।

আমি আপনার সাথে নেই। আছি তাদের সাথে যারা আছে মিশরের রাজপথে জীবনবাজি রেখে। যারা আছে তুরস্কের সরকারে জীবন বাজি রেখে। যারা আছে ইরানের হুকুমাতে। যারা আছে বাংলাদেশের কারাগারে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করায়। আপনি বসে বসে আঙ্গুল চুষূন, বিবি তালাকের ফতোয়া খুজুন, খতনা জানাযার বিধান বার বার আওড়ান যাতে ভুলে না যান...।

অনেকে ইরানী বিপ্লব বা অস্ত্রের জিহাদের কথা বলছেন। ইরানের বিপ্লব ছিল কিছুটা চান্স বিপ্লব। সেখানেও গনভোট করেই শরীয়া চালু হয়েছিল। সমস্যা সেখানেও হতে পারত। সময়টা এখন ১৯৮০ না, আর ইরানের মত অবস্থাও কোথাও নাই। সেই ফর্মেটে বিপ্লব এখন অনেকটাই অসম্ভব। সময়ের সাথে সাথে কর্মপদ্ধতি পরিবর্তন হয়। আমরা মুসলিমরা সব সময়ই একসাথে সব হয়ে যাবে টাইপ চিন্তা করি। অথচ কাফিররাও আমাদের চাইতে মনে হয় বেশী ধৈর্যশীল। তারা তাদের মুবারকের পতনে হালতো ছাড়েইনি বরং প্রতিটী পদক্ষেপে দুরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আবার আজকের পর্যায় পর্যন্ত এসেছে। কিন্তু আমরা শুধু একটু এদিক ওদিক হলেই একলাফে তালগাছ টাইপ চিন্তাতে চলে যাই। মনে রাখুন, আমাদের সমাজে টিভির বেলেল্লাপনা, বেহায়াপনা, খুনোখুনির রাজনীতি, গরিবদের অধিকার বঞ্চিত করা ইত্যাদি একদিনে ঢুকেনি। কুফফারদের অনেক বছরের পরিশ্রমে গড়া হয়েছে এটা। আপনি মুসলিম হিসেবে তাদের প্রাসাদ ভেঙ্গে আপনার ইসলামী প্রাসাদ গড়তেও সময় লাগবে, তাদের প্রাসাদ ভাঙ্গতে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে, জয় পরাজয় আসবেই, বদর আসবে, আবার উহুদ আসবে, আবার খন্দক আসবে। এভাবেই একসময় তাদের প্রাসাদের জায়গায় আপনার প্রাসাদ আসবে। তখনও সমস্যা থাকবে। কারন তখন তারা আবার আপনার প্রাসাদ ভাঙ্গতে চাইবে। সত্যমিথ্যার এই চিরন্তন দ্বন্ধ চলতে থাকবে। মাঝখানে লাভ হল আপনি অর্থাত ইসলাম আসলে মানবতা মুক্তি পাবে, অন্যায় হবে না শাসকদের পক্ষ থেকে। অন্যায়ের মাত্রা কমে আসবে, শান্তিপুর্নভাবে মানুষ জীবন যাপন করতে পারবে।

বিষয়: বিবিধ

৯৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File